Category: writings

Auto Added by WPeMatico

আম্মুর ফোন

এই বলে বন্ধুদের দিকে তাকাতেই দেখি এক বন্ধুর চোখে পানি। ওর যে মা নেই, কথাটা মনে ছিল না। আচ্ছা, বন্ধুটি তখন কী ভাবছিল? হয়তো ভাবছিল, মা থাকতে মায়ের কদর করিস না; যেদিন থাকবে না, সেদিন বুঝবি!

আমার নির্ভীক মা

ভিড় ঠেলে এগোতে এগোতে লঞ্চ ছেড়ে কিছুটা এগিয়েও গেছে। মা পাড়ে দাঁড়িয়ে চিৎকার করতে থাকলেন, ‘আমার বাচ্চা দিয়ে যান, আমার বাচ্চা দিয়ে যান।’ চিৎকার শুনে আশপাশের মানুষ বলতে লাগল, ‘সব লঞ্চ ওপাড়ে গিয়ে থামবে। ওখান থেকে নিয়ে নেবেন। পরের লঞ্চে আসুন।’

মায়ের শাসন

আম্মুর কষ্ট হচ্ছে দেখে বললাম, ‘আম্মু আমি আজ রান্না করি, তুমি বিশ্রাম নাও।’ তিনি মুচকি হাসি দিয়ে বললেন, ‘তোমার রান্না করতে হবে না, গিয়ে গোসল করে নাও।’ কিন্তু কে শোনে কার কথা। যেহেতু বলেছি রান্না করব, তবে রান্না করেই ছাড়ব।

আমার মা সবিতা

আমার বিয়ে হলো। মাকে ছেড়ে বিদেশে এলাম। মাকে মিস করি। কেউ বলে না মায়ের মতো, ‘আর দেরি নয়, বেলা গড়িয়ে গেল। খেয়ে নে! পরে আবার লিখবি!’ আমি কটার সময় খাই, কেউই তার খোঁজ রাখে না। অসুখ হলে কেউ বলে না, ‘আজ আর কাজ করতে হবে না! বিশ্রাম কর! তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠ! এই ফলগুলো খেয়ে নে! বল পাবি দেহে!’ মায়ের মতো ওষুধ কেউই মুখে দেয় না।

তবু বলা হয়নি ভালোবাসি মা

মায়ের কথা ভাবতেই কখন যে চোখ লেগে গেল, ঠাওর করতে পারিনি। আধো ঘুমে হঠাৎ কপালে একটি হাতের স্পর্শ অনুভব করি। অতিপরিচিত একটি হাত। সেকেন্ডের মধ্যেই চোখ খুলে তাকিয়ে দেখি, মা বালিশের পাশে বসে আছেন। মাকে দেখে ছোট বাচ্চার মতো কান্না করে দিই। ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছি। মা শাড়ির আঁচল দিয়ে চোখের জল মুছে দিচ্ছেন।

মায়ের হাত

মা তখন পাঁকে জলে নেমে মাচা বানাত
আমি তো একটা খুঁটিও পুঁতে দিইনি কখনো
আমার জ্বর হলে মা জেগে থাকত
মায়ের জ্বর কপালে আমি তো কখনো মগে করে জল ঢালিনি
এখন শরীরে স্বর্গীয় অনুভূতি
আহা শান্তি! শান্তি!
মায়ের গভীর ধ্যানমগ্ন মুখ ঈশ্বরের কাছাকাছি
দু-চারটে কাপড় পুঁটলিতে বেঁধে বাঁচার জন্য যেভাবে আমরা কাঁটাতার ডিঙিয়ে এসেছি
জীবনের যত কাঁটাতার পেরিয়ে আবার আমি চলে যাচ্ছি চলে যাচ্ছি মায়ের কাছে
একটা প্যারাসিটামলের এত ক্ষমতা নেই
মায়ের হাতের পরশে যত শান্তি আছে

মা তুমি এমন কেন

ব্যাগে ছয় টাকা ছিল। গাড়িতে করেই স্কুলে এলাম। খরচ হলো চার টাকা। পড়ছি আর ভাবছি মা কতটা নির্দয়! পেটে ইঁদুরদৌড় শুরু। খিদেয় একদম ভাঁজ হয়ে যাচ্ছিলাম। রাত আটটার দিকে স্যার ডেকে নিয়ে খেতে দিলেন। মা ফোন করে বলে দিয়েছিল, আমি না খেয়ে টিফিন ছাড়াই এসেছি।

দূরের তারা প্রিয় আম্মা

আমার আম্মা অসাধারণ মানুষ ছিলেন। অসম্ভব পরোপকারী। খুব নিরিবিলি জায়গায় সময় কাটাতে পছন্দ করতেন। অনেক বই পড়তেন। হুমায়ূন, সমরেশ, সুনীলের প্রায় সব বই আম্মার পড়া। প্রতিদিন খবরের কাগজ পড়তেন। চোখের ছানির অপারেশন হয়েছিল। কালো চশমা চোখে। পত্রিকা পড়তে পারছিলেন না। কত পত্রিকা যে বালিশের নিচে জমিয়েছিলেন, পরে পড়বেন ভেবে। আব্বু পাশে বসে শিরোনাম পড়ে শোনাতেন। বইগুলোর পাতায় আম্মাকে খুঁজে পাই।

আমার মা যেন ছায়াবৃক্ষ

জীবনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে তোমার উপস্থিতি আতিশয্য পাওনা আমার। সমস্ত প্রতিকূলতা থেকে আমিত্বকে বাঁচিয়ে রেখে সগৌরবে আজও ছায়াবৃক্ষেরন্যায় আছ আমাদের জীবনে। যেখান থেকে আমরা বাঁচার জন্য অক্সিজেন পাই, ক্লান্তি আর জীবনের ছন্দপতনে এগিয়ে চলার প্রেরণা পাই। ছায়াবৃক্ষ রোদ-জলে নিজেকে শোষিত করে আমাদের সজীব প্রাণবন্ত রাখে সব সময়। জীবনের যতটুকু অর্জন, সবই তোমার ত্যাগ, তিতীক্ষা আর ভালোবাসার ফল।

মা আমি তোমাতে পূর্ণ, তুমি আমাতে পূর্ণ

মা, শিক্ষাজীবন থেকে শুরু করে কর্মজীবন—প্রতিটি সময় তুমি আমার সঙ্গে একদম ঘড়ির কাঁটার মতো লেগে থাকো। আমাকে পিছু হটতে দাওনি কখনো। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে পরিবারের বড় সন্তান হওয়ায় দায়িত্ব ক্রমশ বেড়ে যাচ্ছিল। পড়াশোনার পাশাপাশি উচ্চমাধ্যমিক পড়া অবস্থায় কর্মজীবনে প্রবেশ করতে হয়। কত শত জটিলতার মধ্যে পড়তে হয়েছে। কিন্তু মা তুমি তো আমার সেরা মা। আমি হেরে যেতে যেতেও তোমার পরামর্শে জিতে গেছি। দিনের প্রথম ভাগ থেকে শুরু করে রাতের শেষ ভাগেও তুমি আমার চিন্তায় দিকহারা হয়ে থাকো।