Category: writings

Auto Added by WPeMatico

আকাশ ও পাহাড়ের গল্প

বর্ষাকালে তোমার আকাশটা কালো মেঘে ছেয়ে যায়,
আর দেখো বৃষ্টিতে ভিজে আমার পাহাড়টা কেমন চিরসবুজ হয়ে ওঠে।
নীলের মাঝে তুমি খুঁজে বেড়াও কবিতার অন্ত্যমিল
আর আমি পাহাড়ের কাছে খুঁজি ভালোবাসার উপন্যাস।
আমাদের সুখ–দুঃখের সাথি হোক আকাশ ও পাহাড়
আমাদের ভালোবাসার সাক্ষী হোক আকাশ ও পাহাড়,
আমাদের কাছে আসার ঠিক মাঝখানেও থাক
আকাশ ও পাহাড়ের গল্প।

কিছু অনুভূতি অজানাই থাক

সব জানা হয়ে গেলে মনের গুটিপোকা আবেগ
কিংবা প্রণয়ী অনুভূতিরাও রঙিন ডানার
উড়ুক্কু প্রজাপতি হয়ে দিগ্‌ভ্রান্ত ওড়ে ওড়ে
ভেজা হাওয়ার সোঁদালিতে প্রেমোদক কামনায়
মহুয়া সুঘ্রাণে মদিরা নেশায় নিজেকে ভোলাবে,
ভোলাবে সমাজ সংস্কারের অহেতুক প্রথার
অগণিত নিষেধাজ্ঞা…
তাই বলি—সব জানতে নেই, জানাতেও নেই
কিছু অস্পষ্টতা থাক না দুজনার মধ্যে
স্পষ্টতায় যদি থেমে যায় ব্যাকুল মনের
অস্থির উন্মাদনা আর অদমিত আকর্ষণ!

শরণার্থী

তাদের ইচ্ছা, আশা, স্বপ্ন কাচের মতো চুরমার হয়ে গেল
তবু একটু বাঁচার জন্য পিঁপড়ের মতো লাইন ধরে
কাঁটাতারের বেড়ার দিকে এগিয়ে চলেছে
আর মাটির বুকে দুর্বিষহ জীবন-ইতিহাস লিখে যাচ্ছে;
হোঁচট খেয়ে রাস্তায় পড়ে গেলে, দাঁড়াতে হয় উঠে;
রক্তাক্ত জীবন নিয়ে তারা সেটাই করার চেষ্টা করছে;
কাঁটাতারে, জলসীমায় মার খেতে হচ্ছে
যেন এই নীল গ্রহে তাদের কোনো ঠাঁই নেই,
যেন তাদের কোনো দেশ নেই।

নিতুর নানার আমবাগান

বাবা বুঝতে পারেন মেয়ে মন খারাপ করছে। ডাক দিয়ে কাছে নিয়ে বলেন, তোমরা নানার আমবাগান দেখতে যাবে? নিতু মাথা নেড়ে বলে, ‘হ্যাঁ।’ বাবা বলেন, আম পাকতে আরও কয়েক দিন দেরি আছে। তখন নিয়ে যাব। এখন বৈশাখ মাস। আম পাকে জ্যৈষ্ঠ মাসে।

তোমার প্রতি আক্ষেপ

প্রয়োজন ছিল যখন, ছিলে না তুমি পাশে
একাকিত্বে পড়েছিলাম হতাশার মাঝে
অভিমান অভিযোগ সবই ছিল বাকি
বোঝনি তুমি এড়িয়ে গেছ আমায়
আসলেই তুমি অনেক ব্যস্ত
রঙিন দুনিয়ায়, রঙিন স্বপ্নের মাঝে
কল্পনাটা ভুল ছিল, সত্যিটা বেরিয়ে এল
ভুল ছিল ভাবনা, ভুল ছিল আশা
ভুল ছিল তোমাকে চিনতে না পারা
আজ আছি কাল নাই, দুনিয়ার বুকে
ছোট এই পৃথিবীতে বেঁচে আছি
কবিতার সাথে, কবিতার মাঝে।

ভাঙা শামুকের খোঁজে

কয়েকজন শামুক সংগ্রহকারীর দেখা পেলাম। ক্যামেরা, মাইক্রোফোন নিয়ে তাদের কিছু অভিমত নেওয়া হলো। শামুক কীভাবে শহরে পৌঁছে যায় আর এই বিলকে রেখে যায় একা করে; শামুকের মতো একটা ক্ষুদ্র প্রাণের এ রকম প্রতিবেশের সঙ্গে বিচ্ছেদের ফলে যে প্রভাব পড়ে, তার জীবনের অভিজ্ঞতা শুনলাম। অথচ এই বিলে চাঁদ সওদাগরের জাহাজ এসে নোঙর করেছিল বলে শুনতে পাওয়া যায়। বিলকেন্দ্রিক যে আদর্শ প্রতিবেশের কথা বলা হয়, সেই সোনালি অতীতের কথা শুনলাম।

সবুজের বুকে তপ্ত বালির প্রেম

কত দিন পৃথিবীর জমিনে বৃষ্টি নামেনি, দোলা
দেয়নি দখিনা হাওয়া।
লোকচক্ষুর আড়ালে সূর্যটাও তেজে লাল হয়ে
আছে ভীষণ রকম।
এতটা জেদ তার, আগে কখনো দেখিনি যেন;
একপশলা বৃষ্টিতে ভিজবে বলে প্রেমিকমনে
লাগেনি সুখের ফাগুন।

অস্তিত্বের লড়াই

ভালোবাসার আঙিনায় হৃদয়ের কানামাছি খেলা।
চাঁদের আলোর ডুব সাঁতারে স্বপ্নবিলাস—
মনের ঝিলিমিলি কার্নিশে অচেনার গল্প,
প্রজাপতির রঙিন পাখায় দুর্নিবার পিয়াসা।
অস্তিত্বের লড়াইয়ে এগিয়ে চলে বলাকা মন
ভেসে চলে আগামীর আলোর ভেলায়,
তারার জলসাঘরে অপলক চোখের নির্ঘুম অপেক্ষা।

বউয়েরা তাদের স্বামীকে যা মনে করে

টাকা পেয়ে খুশি হয়ে না চাইতেই সে এক কাপ কফি বানিয়ে নিয়ে এল। কফি খেতে খেতে বললাম, এই জানো, আজকে যে আরেকটা বিশেষ দিন আছে? আজকে কিন্তু প্রাক্তনকে ক্ষমা করে দেওয়ার দিন। বউ খুশি খুশি গলায় বলল, তোমার প্রাক্তন ছিল? তোমার যে চেহারা, থাকাটাই তো স্বাভাবিক।

ফেলে আসা দিন

এই গ্রীষ্মের দুপুরে কতশত আম চুরি করে ভর্তা বানিয়ে খেয়েছি! ধরা পড়ায় আম্মুর হাতের থাপ্পড়ও খেয়েছি অনেক। সব যেন অমৃত ছিল।
‘ঝড়ের দিনে মামার দেশে আম কুড়াতে সুখ,
পাকা জামের মধুর রসে রঙিন করি মুখ।’
পল্লিকবি জসীমউদ্‌দীনের ছড়াটার কথা খুব মনে পড়ছে। আরও মনে পড়ছে শৈশবের ফেলে আসা দিনগুলোর কথা!